
সোলার প্যানেল কার্যকারিতা বাংলাদেশে সৌর শক্তির ব্যবহার । বাংলাদেশের উন্নয়নে সৌর শক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গ্রামীণ এলাকা থেকে শহরাঞ্চল পর্যন্ত সোলার প্যানেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই নবায়নযোগ্য এনার্জি সোর্স দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সৌর শক্তি উৎপাদন পরিবেশবান্ধব শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার জাকির হোসেন তালুকদার ৬ বছর ধরে সোলার প্যানেল ব্যবহার করে আসছেন। তিনি জানান, একটি প্যানেল স্থাপনে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল, যা তিনি কিস্তিতে পরিশোধ করেছেন।
সোলার প্যানেল ব্যবহার করে বাতি, ফ্যান, টেলিভিশনসহ নানা বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চালানো সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া, এই প্যানেলগুলোর ২০ বছরের ওয়ারেন্টি থাকায় দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠী সৌর বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে, যা দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
মূল তথ্য
- সোলার প্যানেল স্থাপনে প্রাথমিক ব্যয় উচ্চ হলেও দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক
- গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৪ কোটি মানুষ সৌর বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে
- সৌর শক্তি উৎপাদন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলায় সহায়ক
- সোলার প্যানেলের ২০ বছরের ওয়ারেন্টি দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা প্রদান করে
- পরিবেশবান্ধব এই শক্তি উৎস দেশের টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখছে
সৌর শক্তির প্রাথমিক পরিচিতি
সৌর শক্তি একটি নবায়নযোগ্য শক্তি উৎস। এটি সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুত তৈরি করে। এই প্রক্রিয়াটি ফটোভোল্টাইক প্রক্রিয়া নামে পরিচিত।
সৌর প্যানেল সূর্যালোক সংগ্রহ করে। তারপর এটি বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
সৌর শক্তির মৌলিক ধারণা
সৌর কোষ সূর্যের আলো গ্রহণ করে বিদ্যুৎ তৈরি করে। এই বিদ্যুৎ ব্যাটারিতে সংরক্ষিত হয়।
চার্জ কন্ট্রোলার ব্যাটারিকে অতিরিক্ত চার্জ থেকে রক্ষা করে। সোলার প্যানেল থেকে প্রাপ্ত ডিসি বিদ্যুৎ ইনভার্টার দ্বারা এসি বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
বাংলাদেশে সৌর শক্তির সম্ভাবনা
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান সৌর শক্তি উৎপাদনের জন্য উপযোগী। দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বছরে প্রায় ৩০০ দিন সূর্যালোক পাওয়া যায়।
এই সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুতায়ন ও কৃষিতে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়ছে।
বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান
বিশ্বব্যাপী সৌর শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে।
২০২৪ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০% সৌর শক্তি থেকে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌর শক্তি শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনই নয়, এটি পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
সোলার প্যানেল কার্যকারিতা
বাংলাদেশে সোলার প্যানেল ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করে। এটি পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই শক্তির একটি উৎস।
সৌর কোষের কার্যপ্রণালী
সৌর কোষের কাজ করার ক্ষমতা সৌর ফটোভোল্টাইক প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। এটি সূর্যের আলোকে সরাসরি বিদ্যুতে রূপান্তর করে। একটি সাধারণ সোলার প্যানেল ২০ ওয়াট পর্যন্ত শক্তি উৎপাদন করতে পারে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া
সোলার প্যানেল দুই ধরনের সিস্টেমে কাজ করে: অনগ্রীড ও অফগ্রীড। অনগ্রীড সিস্টেম জাতীয় গ্রিডের সাথে সংযুক্ত থাকে। অফগ্রীড সিস্টেম স্বাধীনভাবে কাজ করে।
একটি প্যানেলের সর্বোচ্চ শক্তি ভোল্টেজ ১৮.৫০ ভোল্ট। আর সর্বোচ্চ কারেন্ট ১.০৮ অ্যাম্পিয়ার।
দক্ষতা নির্ধারক উপাদান
সোলার প্যানেলের দক্ষতা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে রয়েছে প্যানেলের অবস্থান এবং সূর্যালোকের তীব্রতা। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণও গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণস্বরূপ, একটি প্যানেল ২৪০০ পাস্কাল পর্যন্ত চাপ সহ্য করতে পারে। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
সোলার প্যানেলের দাম প্রতি ওয়াটে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এটি এর গুণগত মান ও ক্ষমতার উপর নির্ভর করে।
বাংলাদেশে সৌর শক্তির বর্তমান অবস্থা

বাংলাদেশে সৌর শক্তির ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০৮ সালের আগে দেশে তিন লাখেরও কম সৌর গৃহ ব্যবস্থা ছিল। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩০ লাখে। ২০১৭ সালের বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য শক্তি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লাখ সৌর প্যানেল ব্যবহৃত হচ্ছে।
সৌর শক্তির প্রভাব গ্রামীণ বিদ্যুতায়নে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। বর্তমানে প্রায় ৬০ লাখ পরিবারে সৌর বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। এর ফলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত হয়েছে। তবে জাতীয় গ্রিডের সম্প্রসারণের কারণে সৌর শক্তির প্রতি আগ্রহ কিছুটা কমেছে।
সৌর শক্তির প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা করে সরকার ২০১০ সালে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল যে ১০ বছরের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০% নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে আসবে। এই লক্ষ্য অর্জনে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (IDCOL) বিভিন্ন এনজিও’র সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশে সৌর শক্তির বিকাশে ৪৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে।
যদিও জাতীয় গ্রিডের সম্প্রসারণের ফলে সৌর শক্তির চাহিদা কমছে, তবুও এর গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবেশ বান্ধব এই শক্তি উৎস বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সৌর শক্তির অর্থনৈতিক প্রভাব

সৌর শক্তি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলছে। এটি স্থাপন থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা পর্যন্ত বিস্তৃত।
স্থাপন ও পরিচালন ব্যয়
সোলার প্যানেল স্থাপনের প্রাথমিক খরচ উচ্চ। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা অনেক।
একটি সোলার প্যানেল সিস্টেম স্থাপনে গড়ে ৫০,০০০ টাকা খরচ হতে পারে। এটি ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে।
দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সুবিধা
সৌর শক্তি নির্ভরশীলতা বাড়লে মাসিক বিদ্যুৎ বিল কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে, বিল শূন্যে নেমে আসে।
সরকারি প্রণোদনা ও ট্যাক্স ছাড় সুবিধা পাওয়া যায়। বাড়ির মূল্য বৃদ্ধি পায় সোলার প্যানেল স্থাপনের ফলে।
খরচ কমানোর উপায় হিসেবে সৌর শক্তি দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক বিনিয়োগ।
কর্মসংস্থানের সুযোগ
সৌর শক্তি খাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য শক্তি সংস্থার মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৪২ মিলিয়ন নতুন চাকরি সৃষ্টি হতে পারে।
এর মধ্যে সৌর শক্তি খাতে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হবে। বাংলাদেশেও সোলার প্যানেল উৎপাদন, স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণে নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
গ্রামীণ বিদ্যুতায়নে সৌর শক্তির ভূমিকা

বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে সৌর শক্তির ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি গ্রামীণ বিদ্যুতায়নে অপরিসীম গুরুত্ব রাখে। বর্তমানে, ৪৫ লক্ষেরও বেশি বাড়ি ও দোকানে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এটি প্রায় ২ কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করছে।
গ্রামীণ এলাকায় সৌর বাতি আলো ব্যবহারের ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। প্রতি মাসে গড়ে ৮০,০০০ সোলার হোম সিস্টেম বিক্রি হচ্ছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। গ্রামীণ বিদ্যুতায়নের এই প্রক্রিয়া দেশের বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, ১৮০০টি তথ্য সেবা কেন্দ্র ও ৪৫০১টি ইউনিয়ন ই-কেন্দ্রে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব উদ্যোগ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সৌর শক্তির ব্যবহার গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ বিশ্বে আবাসিক সৌর শক্তি ব্যবহারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। গ্রিড-বহির্ভূত গ্রামীণ এলাকায় ৫.৮ মিলিয়নেরও বেশি বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে, দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
সোলার প্যানেল কার্যকারিতা সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ

বাংলাদেশে সৌর শক্তি ব্যবহার বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরকার এবং বেসরকারি খাত একসাথে কাজ করছে। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৭১৬.৭২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে।
এখনও ৫৪৩ মেগাওয়াট উৎপাদন চলছে। এবং ১,৪১৬ মেগাওয়াট উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
ইডকলের কার্যক্রম
ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল) গ্রামীণ এলাকায় কাজ করছে। তারা সৌর বৈদ্যুতিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
গ্রামীণ শক্তির অবদান
গ্রামীণ শক্তি প্রতিষ্ঠান দূরবর্তী এলাকায় কাজ করছে। তারা সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করে বিদ্যুতায়ন করছে।
এই প্রচেষ্টায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠী সৌর শক্তির সুবিধা পাচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা
বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান সৌর প্যানেল উৎপাদন ও বিপণনে অংশ নিচ্ছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সৌর প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করছে।
বাংলাদেশ সৌর ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া বলেছেন:
“নতুন পরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”
এসব উদ্যোগের ফলে সৌর শক্তির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে।
কৃষিতে সৌর শক্তির ব্যবহার
বাংলাদেশে কৃষি ক্ষেত্রে সৌর শক্তির ব্যবহার বেশ বেশি হচ্ছে। দেশের লোকের প্রায় ৪০% কৃষির উপর নির্ভর করে। সৌর শক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা খরচ কমাতে পারছেন। এছাড়াও তারা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হচ্ছেন।
সেচ কাজে সৌর পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে। এই পাম্পগুলো সূর্যের আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করে জমিতে পানি সরবরাহ করে। এভাবে কৃষকরা বিদ্যুৎ বা জ্বালানি খরচ ছাড়াই জমি সেচ করতে পারছেন। সৌর সেচ ব্যবস্থা শুষ্ক অঞ্চলে ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
ফসল শুকানোর জন্য সৌর ড্রায়ার ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ড্রায়ারগুলো সূর্যের তাপ ব্যবহার করে ফসল শুকিয়ে নেয়। এভাবে কৃষকরা কম সময়ে ও কম খরচে ফসল সংরক্ষণ করতে পারছেন।
- সৌর পাম্প সেচ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে
- সৌর ড্রায়ার ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে
- কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমছে
- উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে
কৃষিতে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়লে দেশের কৃষি ও বিদ্যুৎ উভয় ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। এটি কৃষকদের আয় বাড়াতে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
পরিবেশগত প্রভাব ও সুবিধা
সৌর শক্তি ব্যবহার করা পরিবেশকে ভালো করে তোলে। এটি জীবাশ্ম জ্বালানির একটি ভালো বিকল্প। এই ক্লিন এনার্জি টেকনোলজি দিয়ে পরিবেশ দূষণ কমে যায়।
কার্বন নির্গমন হ্রাস
জাতীয় নবায়নযোগ্য শক্তি গবেষণাগারের মতে, ১০০ গিগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে ১০০,৯৯৫,২৯৩ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমে যায়। এটি বায়ু দূষণ কমায় এবং মানুষের স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা
সৌর শক্তি ব্যবহার করলে অম্ল বৃষ্টি ৯৭% কমে যায়। এছাড়াও, সমুদ্রের পুষ্টিসমৃদ্ধি ৯৮% কমে যায়। জৈব জ্বালানির তুলনায় সৌর শক্তি ৮০% কম জমি লাগে।
লরেন্স বার্কলে জাতীয় গবেষণাগারের গবেষকরা দেখিয়েছেন, ২০০৭ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে সৌর শক্তি ব্যবহারে ২.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ কমে গেছে।
সামগ্রিকভাবে, সৌর শক্তি পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কার্বন নির্গমন কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহায়তা করে। ভবিষ্যতে এই পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎস আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে।
চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
বাংলাদেশে সৌর শক্তি ব্যবহার বেশ বেড়েছে। কিন্তু এতে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। অনেক সোলার প্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কারণ তাদের রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না।
১৪৮,৫৬৯টি স্থাপিত প্যানেলের মধ্যে ১৫,০০০ এরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর কারণ হিসেবে অপর্যাপ্ত ব্যবহার এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব বলা হয়েছে।
সৌর শক্তি ব্যবহার বাড়াতে উচ্চমানের প্যানেল ব্যবহার করা দরকার। একটি সোলার প্যানেল ২০ বছর পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু খারাপ স্থাপনের কারণে অনেক প্যানেল পাঁচ বছরের মধ্যেই বিকল হয়ে যায়।
এসব সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। লিথিয়াম ব্যাটারি ব্যবহার করে চার্জিং সময় কমানো যায়।
নেট মিটারিং সিস্টেম চালু করে সৌর শক্তির ব্যবহার আরও কার্যকর করা যেতে পারে।
সোলার প্যানেল রক্ষণাবেক্ষণ ও সৌর শক্তি নির্ভরশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা একটি স্থায়ী ও পরিচ্ছন্ন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বাংলাদেশে সৌর শক্তির ভবিষ্যৎ আশাদায়ক। সৌর প্রযুক্তির উন্নয়ন দ্রুত এগিয়ে চলছে। নবায়নযোগ্য শক্তির সম্ভাবনা দিনের বেলায় বেড়ে যাচ্ছে।
এটি দেশের শক্তি খাতে একটি নতুন যুগের শুরু করছে।
প্রযুক্তিগত উন্নয়ন
গবেষকরা স্বচ্ছ ফটোভোলটাইক সেল নিয়ে কাজ করছেন। এই প্রযুক্তি সৌর প্যানেলের দক্ষতা বাড়াবে। এছাড়াও, খরচ কমবে।
বাজার বিস্তৃতি
সৌর প্যানেলের দাম কমার ফলে এর ব্যবহার বেড়েছে। বাড়ি-ঘর, অফিস-আদালত সবখানেই সৌর প্যানেল দেখা যাচ্ছে।
বিল্ডিং-ইন্টিগ্রেটেড ফটোভোলটাইকস নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। স্মার্ট উইন্ডো থেকেও বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
সরকারি পরিকল্পনা
সরকার নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
গ্রামীণ এলাকায় সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের কাজ চলছে। এসব উদ্যোগ দেশকে শক্তি নিরাপত্তার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সৌর শক্তি আমাদের ভবিষ্যৎ। এর মাধ্যমে আমরা পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারি।
জাতীয় গ্রিডে সৌর শক্তির অবদান
সোলার প্যানেল কার্যকারিতা: বাংলাদেশে সৌর শক্তির ব্যবহার। বাংলাদেশে জাতীয় গ্রিডে সৌর শক্তির ভূমিকা বেশ বেশি হচ্ছে। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে একটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। এটি থেকে প্রতিদিন ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হয়।
এই কেন্দ্রটি ৮ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে। এর নির্মাণে ৫৪ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এক ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রায় ১৪ টাকা ৭৫ পয়সা।
সরকারের লক্ষ্য দেশে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন। এর মধ্যে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে।
আগামী বছর আরও পাঁচটি কেন্দ্র থেকে ৩৩২ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। গ্রিড সংযোগের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় সৌর শক্তির ব্যবহার বেড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি অভিনব প্রকল্প হিসেবে দুটি পুকুরের উপর ১৫০০টি সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। এই ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২.৩ মেগাওয়াট।
এই ধরনের প্রকল্প জমির ব্যবহার ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব করে তোলে। এটি গ্রিড-টাইড সিস্টেমের একটি উদ্ভাবনী রূপ।
FAQ
সৌর শক্তি কীভাবে কাজ করে?
বাংলাদেশে সৌর শক্তির ব্যবহার কতটা প্রচলিত?
সৌর প্যানেল স্থাপনের খরচ কত?
সৌর শক্তির প্রধান সুবিধাগুলি কী কী?
সৌর শক্তির প্রধান চ্যালেঞ্জগুলি কী কী?
কৃষিতে সৌর শক্তি কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে?
সরকার সৌর শক্তি খাতে কী ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে?
সৌর শক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কেমন?
সোলার এনার্জি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ বিল কতটা কমানো যায়?
সোলার এনার্জি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ বিল কতটা কমানো যায়? বর্তমানে সোলার এনার্জি ব্যবহার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ব্যবস্থার একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। বাড়িতে…
সোলার প্যানেল সাইজ নির্বাচন: বাড়ির জন্য উপযুক্ত নির্দেশিকা
সোলার প্যানেল সাইজ নির্বাচন। সৌর শক্তি ব্যবহার দিনে দিন বেড়েছে। বাড়ির জন্য সোলার প্যানেল সাইজ বেছে নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি…
সোলার প্যানেল প্রকারভেদ | বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত
সোলার প্যানেল প্রকারভেদ বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত। বাংলাদেশে সৌর শক্তি ব্যবহার করা বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ…
সোলার প্যানেল কার্যকারিতা: বাংলাদেশে সৌর শক্তির ব্যবহার
সোলার প্যানেল কার্যকারিতা বাংলাদেশে সৌর শক্তির ব্যবহার । বাংলাদেশের উন্নয়নে সৌর শক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গ্রামীণ এলাকা থেকে…
সোলার প্যানেল মেইনটেন্যান্স: সঠিক পরিচর্যার নির্দেশিকা
সৌর শক্তি প্রযুক্তি এখন বেশ জনপ্রিয়। সোলার প্যানেল মেইনটেন্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি যথাযথভাবে পরিচর্যা করলে দীর্ঘমেয়াদে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।…






